by Sourav Ghosh | Nov 17, 2018 | Adventure, Hill Stations, OFFBEAT BENGAL, OFFBEAT INDIA, West Bengal, বাংলা |
Reading Time: 5 minutesউপত্যকায় শরীর মুড়ে চতুর্থ দিন ভোর এলো এখানেও…… ঠিক আগল আলগা করে জড়োসড়ো হয়ে নয়; আধশোয়া ভোরের ঘুম ভাঙালো ধোঁয়া ওঠা চায়ের মতো আবছায়া কুয়াশা। এই তো সেই সময়, যখন ভালোবাসার দেখা পেয়ে গাছ হয় আনত, ফসল আভূমি চুম্বন করে, রোদ খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে। সামনের উপত্যকা ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয় সুন্দর সকালকে, সবুজ, হলুদ ঢেউ খেলে যায় আজ সকালের আমন্ত্রণে। নিচে তোদে-তাঙটা বা তামটা ভ্যালি আড়মোড়া ভেঙে সেজেগুজে টুকটুকে হয়ে আমায় দেখছে অবাক চোখে। তার গা ভর্তি সোনালী গম, মাথায় সবুজ চুলে সোনালী মুকুট, কানে, গলায় সোনার ঝিকিমিকি, এক্কেবারে সালংকারা। আয়েশ করে সকালের রোদে পিঠ দিয়ে পাথরের ওপর আমরা সবাই চা নিয়ে বসে গল্পে মশগুল হলাম; জোসেফ এ অঞ্চলের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বলছিলো। আমরাও শেয়ার করছিলাম আমাদের ছোটোখাটো হাঁটার গল্প। প্রথম যখন লাভা থেকে আসবো ভেবেছিলাম তখন কি হয়েছিল তাতো আগেই বলেইছি, আরেকটা অভিজ্ঞতা বলি। তখন ও জানিনা কোথা থেকে ট্রেক করলে সুবিধা, তখন আমি আলিপুরদুয়ারে; আমরা ঠিক করলাম নেওড়াভ্যালি হাঁটবো, যেমন ভাবা তেমন কাজ, তিন চারজনে এক শীতকালে বেরিয়ে পড়লাম, সালটা ২০০৪ মনে হয়। এলাম ঝালং হয়ে তামটা ভ্যালি, কাউকেই পেলামনা যে বলতে পারে কি করে, কোন রাস্তায় ট্রেকটা করা যায়। কোথায় গিয়ে এ জঙ্গল শেষ হবে তাও ঠিকঠাক জানিনা, শুধু জানি এ ঘন জঙ্গলে আমরা হাঁটবো। কোনো ফরেস্টের লোকজন ও চোখে পড়লোনা। যাক, আমরা শুরু করলাম হাঁটা, ছোট ছোট চোরাবাটো দিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। জানিনা কোনদিকে যাচ্ছি, কেন জানি হঠাৎ করে চাঁদের পাহাড় মনে পড়ছিলো, অন্ধকার জঙ্গল, বিশাল বিশাল গাছ, নিচেও লতাপাতায় পা জড়াচ্ছে, আমরা চলেছি। পথে হঠাৎ একটি লোকের দেখা পেয়ে হাতে চাঁদ পেলাম; ও তো আমাদের দেখে ভয় পেয়ে গেলো, আমরা অনেক কষ্টে বোঝালাম যে আমরা প্রায় ঘন্টা চারেক হাঁটছি, কিন্তু কোনদিকে যাচ্ছি কিছুই...
by Sourav Ghosh | Oct 3, 2018 | Adventure, OFFBEAT INDIA, Rajasthan, wildlife, বাংলা |
Reading Time: 5 minutesজঙ্গলময় রাজস্থান – রনথম্ভোর ন্যাশনাল পার্ক রাজস্থান বলতেই মনে পড়ে কেল্লা, বালি, পাথর আর মরুভূমির কথা। কিন্তু জঙ্গল, বন্যপ্রাণ ও পক্ষীকুলের সম্ভার নিয়ে আরেকটা সবুজ অংশও রয়েছে এই বৈচিত্রময় রাজ্যে। ‘রেগিস্তান’এর ছবির আড়ালে পূর্ব রাজস্থানে রয়েছে তিনটি অনন্য অভয়ারণ্য – সরিস্কা, রনথম্ভোর ও ভরতপুর। কলকাতা থেকে ৮-১০ দিনের রাজস্থানের ট্যুর প্যাকেজে গিয়ে সাধারণত যা দেখা হয় না অধিকাংশ পর্যটকেরই। “Maati Baandhe Painjanee../ Bhangdi Pehne Baadli../ Dedo Dedo Baavdo../ Ghod Mathod Bhavdi…” চেনা চেনা ঠেকছে গানের লাইনগুলো? এটা রাজস্থান ট্যুরিজমের বিজ্ঞাপনের সেই সরকারি থিম সং। সেই বিজ্ঞাপনে একেক জন রাজস্থানকে দেখে একেকরকম ভাবে। এতই বৈচিত্রে ভরা রাজস্থান। মনমাতানো রাজস্থানী ফোক গানটির সাথে একাত্ম হয়েই আজ দেখে নেওয়া যাক বাঘ দেখার জন্য বিখ্যাত রনথম্ভোরের জঙ্গলকে। দক্ষিণ-পূর্ব রাজস্থানে সওয়াই মাধোপুর জেলায় বিন্ধ্য ও আরাবল্লী পাহাড়ে ঘেরা ৩৯২ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে রনথম্ভোর জাতীয় উদ্যান। উত্তর ভারতের বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান গুলির মধ্যে একটি এই রনথম্ভোর। জয়পুর থেকে ১৩২কিমি ও কোটা থেকে ১১০কিমি দূরত্বে সওয়াই মাধোপুর শহর। সওয়াই মাধোপুর স্টেশন থেকে ১৪ কিমি দূরে পার্কের প্রবেশ দ্বার। অতীতে জয়পুরের মহারাজাদে র প্রিয় শিকার ভূমি ছিল রনথম্ভোর। ১৯৮০তে জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি পায়। পাহাড় ঘেরা উঁচু নিচু ঢেউ খেলানো রুক্ষ জমিতে শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্য। বন দপ্তরের ক্যান্টারে চড়ে জঙ্গল সাফারি। জঙ্গলে দেখা মেলে সম্বর, নীলগাই, চিতল হরিণ, লেঙুর, বুনো শুয়োর ও অজস্র ময়ূর। এছাড়াও এজঙ্গলে আছে লেপার্ড, শ্লথ ভল্লুক, হায়েনা আর বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও সরীসৃপ। আর বনের রাজা বাঘ এ জঙ্গলের মূখ্য আকর্ষণ। বর্তমানে ৬০-৬৫ টি বাঘ আছে রনথম্ভোরে। জঙ্গলের ভিতরে রয়েছে তিনটি বিশাল লেক, যার মধ্যে পদম তালাও সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। তালাওয়ের কিনারে লাল বেলেপাথরে তৈরি যোগী মহল। অতীতের রাজমহল ও হান্টিং লজটি আজ একটি হেরিটেজ হোটেল। লেকের কাছেই আছে এক সুপ্রাচীন...
by subhamay pal | May 25, 2018 | বাংলা |
Reading Time: 4 minutes জঙ্গলে মঙ্গল? ওহ, সে এক কান্ড হয়েছিল সেবার; বড়ো বাঁচা বেঁচেছিলাম I যেবার আয়লার দাপটে পশ্চিমবঙ্গে বিপর্যয় নেমে এসেছিলো, তখন তো ট্রেক করবো বলে আমরা লাভায় I ২০০৯ এর মে মাসের ২৪ তারিখ পারমিশন নিয়ে ২৫ এ রওনা হওয়ার কথা; তো ২৪ এ ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসে গিয়ে শুনলাম রেঞ্জারবাবু বাইরে থেকে ফিরতে পারেননি, তাই পরদিন পারমিশন পাওয়া যাবে I মন খারাপ নিয়ে ফিরলাম হোটেলে, সাথে সাথেই বাড়ি থেকে ফোন, আবহাওয়া অফিস বলেছে কাল, অর্থাৎ ২৫ এ দুপুরে আয়লার ঝড় আছড়ে পড়বে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে I খুব একটা পাত্তা না দিলেও সবাই ঠিক করলাম যে ট্রেক ক্যানসেল করবো, কারণ যেটুকুই ঝড় হোক, জঙ্গলের ভেতরে থাকবো আমরা, সেটা ভীষণ ই বিপদজনক হয়ে যাবে I সেই ভেবে ট্রেক মুলতুবি রেখে ২৫ তারিখ সকালে খুব মন খারাপ নিয়ে হেঁটে হেঁটে রিশপ চলে গেলাম I পৌঁছলাম রিশপ, যখন বাড়ি থেকে ফোনে জানলাম কলকাতায় দুপুরে আয়লার তান্ডব চলছে, তখন রিশপে মেঘের ঘনঘটা; অল্প ঝড় শুরু, আমরা বুঝলাম বিপদে পড়েছি I কিন্তু লাভা ফেরার কোনো গাড়ি পেলামনা সেই সন্ধ্যায়; বাধ্য হয়ে রিশপেই একটা ছোট্ট হোমস্টেতে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম I রাত বাড়তে থাকলো, বাড়তে লাগলো ঝড়ের প্রকোপ, বারান্দায় বসে; সামনে রাস্তা, ওপারেই খাদ, গাছপালা জঙ্গলে ভর্তি; পশুপাখির ভয়ার্ত আওয়াজে চারিদিকে আরো ভয়ের আবহ I বসে বসে দেখছি আমার নিচে খাদের ভেতর থেকে বিদ্যুৎঝলক I রাতটা কাটলো প্রবল উৎকণ্ঠায়, বাড়ির ফোনে জানলাম ওদিকে ঝড়ের প্রকোপ কমেছে, আর এদিকে তখন দামাল হাতির আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ঝড়; পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে শক্তি বেড়েছে আরো I খুব ভোরে জেগে গেলাম, ঝড় চলছে তখনো, বারান্দায় বসে দেখি দুটো রেড পান্ডা খাদ থেকে উঠে ছুট্টে আমাদের ঘরের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেলো, জানিনা কি হোলো তাদের I সিন্ডিকেট থেকে একটা গাড়ি পাওয়া...